রক্তে লেখা ইতিহাস" মানবতা কাঁদে, আমরা নীরব!

 পৃথিবীর ইতিহাস শুধু সভ্যতা, শিল্প কিংবা জ্ঞান-বিজ্ঞানের ইতিহাস নয়—এটি একই সঙ্গে রক্তে রাঙানো নিষ্ঠুরতার ইতিহাস। শত শত বছর ধরে শাসক, ধর্মান্ধ, জাতিবিদ্বেষী কিংবা ক্ষমতালোভীরা মানবজাতির নামেই মানবতাকে হত্যা করেছে।


১. আরমেনিয়ান গণহত্যা (১৯১৫):


প্রায় ১৫ লাখ আরমেনিয়ানকে নির্বিচারে হত্যা করা হয় অটোমান শাসনের সময়। শুধু তাদের জাতিগত পরিচয়ের কারণে একেকটি পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল।


২. হলোকাস্ট (১৯৩৯-১৯৪৫):


হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসি বাহিনী প্রায় ৬০ লাখ ইহুদিকে গ্যাস চেম্বারে পুড়িয়ে, বন্দিশিবিরে রেখে হত্যা করে। পৃথিবী দেখেছে সভ্যতার মুখোশের আড়ালে বর্বরতা কতটা নির্মম হতে পারে।


৩. বাংলাদেশের গণহত্যা (১৯৭১):


পাকিস্তানি সেনারা ২৫ মার্চের রাতে ঢাকাসহ গোটা বাংলাদেশে চালিয়েছিল এক বীভৎস হত্যাযজ্ঞ। লক্ষ লক্ষ নিরীহ বাঙালি নারী-পুরুষ, শিশু-শিক্ষার্থীকে মেরে ফেলা হয়েছিল শুধুমাত্র স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখার জন্য।


৪. রুয়ান্ডা গণহত্যা (১৯৯৪):


মাত্র ১০০ দিনের মধ্যে ৮ লাখের বেশি তুতসি ও সহনশীল হুতু জনগণকে হত্যা করা হয়েছিল ধারালো দা, লাঠি, আগুনে পুড়িয়ে—এক অমানবিক উন্মাদনায়।


---


আমরা কী শিখলাম?


ইতিহাস আমাদের শেখায়, ঘৃণা ও প্রতিহিংসা যদি সমাজে বাসা বাঁধে, তাহলে মানুষ সবচেয়ে নৃশংস জন্তুতে পরিণত হয়। আর আমরা বারবার সেই ঘৃণাকেই প্রশ্রয় দেই। বারবার ভুলে যাই—একটি শিশুর কান্না, একটি মায়ের আর্তনাদ, একটি পিতার নিথর দেহের পাশে দাঁড়ানো সন্তান—এসবই মানুষের নয়, পশুত্বেরই প্রমাণ।


---


আজকের প্রশ্ন:


এই হত্যাকাণ্ডগুলো শুধুই ইতিহাস, না কি আজও কোথাও কোনো নিরীহ জাতি, ধর্ম, সম্প্রদায় নিপীড়নের শিকার?

আমরা কি সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পারছি? না কি আবারও আমরা নীরব দর্শক?


---


উপসংহার:


মানবতা একটি ধর্ম নয়—এটি সমস্ত ধর্মের মূল। তাই ইতিহাসকে শুধু বইয়ের পাতায় রেখে দেবে না, সচেতন হও, প্রতিবাদ করো, মানবতা বাঁচাও। কারণ, ইতিহাস যদি বারবার রক্ত দিয়ে লেখা হয়, ভবিষ্যতেও আমরা চোখের সামনে মানবতার লাশ দেখব।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

উম্মাহ জেগে ওঠো! মুসলিম রক্ত আর কতদিন ঝরবে?"